চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা না করে বর্তমানে অনেকেই ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছেন ইউটিউবিং। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শিক্ষাগত যোগ্যতা ও যথাযথ অভিজ্ঞতা থাকা সত্বেও চাকরির স্বল্পতায় অনেকেই ফ্রিল্যান্সিংয়ের দিকে ঝুঁকছেন। ফ্রিল্যান্সিং বা মুক্ত পেশায় দিন দিন মানুষের আনাগোনা বেড়েই চলেছে। ফ্রিল্যান্সিংয়ে যেমন রয়েছে কাজের স্বাধীনতা তেমনই রয়েছে বিপুল অর্থ উপার্জনের সুযোগ।
ফ্রিল্যান্সিং বলতে যে শুধুমাত্র একটি কাজ, তা কিন্তু নয়। ফ্রিল্যান্সিংয়ে রয়েছে কাজের ভিন্নতা। ইউটিউবিং করে আয় একটি সর্বজনীন পন্থা। অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে একটি কাজের বিপরীতে পেমেন্ট করা হয়। কাজ যদি না করা হয় তাহলে ইনকামও নেই। কিন্তু ইউটিউব একটু ভিন্ন প্ল্যাটফর্ম। ইউটিউবে একটি ভিডিও পাবলিশ করলে সারাজীবন এটি ভিউ হতে থাকবে। অর্থাৎ আপনার ইউটিউব চ্যানেল যদি উপার্জনের জন্য প্রস্তুত হয় তাহলে একটি ভিডিও পাবলিশ করার পর লাইফটাইম সেটা থেকে ইনকাম হতে থাকবে, যতোবার ভিডিওটি দেখা হবে।
ইউটিউব একটি গাছের মতো, একবার রোপন করলে সারা জীবন ফল দিয়ে যাবে। এক কথায় বলা যেতে পারে ইউটিউব একটি প্যাসিভ আর্নিং পন্থা
কিভাবে শুরু করবেন?
ইউটিউব যেহেতু একটি ভিডিও প্লাটফর্ম সেহেতু আপনাকে ভিডিও নিয়ে ভাবতে হবে। ভাবতে হবে আপনি কি নিয়ে ভিডিও বানাবেন। তবে অবশ্যই ইউটিউব শুরু করার আগে কোন বিষয়ের ভিডিও বানাবেন সেটি নিশ্চিত হয়ে নিন।
কি বিষয় নিয়ে কাজ করবেন?
আপনি ইচ্ছে করলে একই চ্যানেলে নানাবিধ ভিডিও আপলোড করতে পারবেন। কিন্তু উপার্জনের ক্ষেত্রে আপনাকে যে কোনো একটি টপিক বেছে নিতে হবে। উদাহরণস্বরূপ আপনি যদি ঘোরাঘুরি পছন্দ করেন তাহলে ট্রাভেলিংয়ের ভিডিও বানাতে পারেন। অথবা যদি গান গাইতে পছন্দ করেন তাহলে মিউজিং ভিডিও নিয়ে কাজ করতে পারেন। এক কথায় আপনি যে বিষয়ে পারদর্শী সে বিষয় নিয়ে নিয়মিত ভিডিও বানান।
মনিটাইজ পেতে কি লাগবে?
ইউটিউব পার্টনারশীপ প্রোগ্রাম বা মনিটাইজ পেতে আপনাকে ইউটিউবের কিছু টার্গেট ফিলাপ করতে হবে। আগে ইউটিউবে মনিটাইজ পাওয়া একদম সহজ বিষয় ছিল। কিন্তু গত কয়েক বছর যাবৎ ইউটিউব কিছু শর্তাবলী বেধে দিয়েছে। বর্তমান সময় থেকে বিগত ১ বছরের মধ্যে যদি আপনার চ্যানেল ৪ হাজার ঘণ্টা ওয়াচ টাইম থাকে এবং ১ হাজার সাবস্ক্রাইবার থাকে তাহলে ইউটিউব মনিটাইজ প্রোগামে এড হতে পারবেন।
টার্গেট ফিলআপ করবেন কিভাবে?
আপলোডকৃত ভিডিওগুলো সোস্যাল সাইট যেমন: ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদিতে শেয়ার করুন। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে ইউটিউবে শক্তি খাটিয়ে চ্যানেল Rank করানো যায় না। নিয়মিত ভিডিও আপলোড করলে কখন কোন ভিডিওটি Rank করবে সেটি আপনিও বুঝতে পারবেন না।
এছাড়া চ্যানেলে বেশি পরিমাণ ভিডিও থাকলে সার্চ থেকে কিছু ভিউয়ার পেয়ে যাবেন। চ্যানেলে যতো বেশি টপিকের ভিডিও থাকবে ভিউও ততো বেশি হবে।
ইউটিউবে যখন কেউ সার্চ করবে এবং সেই সার্চ রিলেটেড ভিডিও আপনার চ্যানেলে থাকবে, তখন সার্চ রেজাল্টে আপনার ভিডিও দেখা যাবে। ফলে আপনার ভিউ বেড়ে যাবে।
ভিডিও কোয়ালিটি ভালো না হলে কি মনিটাইজ পাবো?
ভিডিও কোয়ালিটির সাথে মনিটাইজ না পাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। তবে আপনার ভিডিও কোয়ালিটি যতো ভালো হবে, ততো আপনার ওয়াচটাইম ও ভিউস বেড়ে যাবে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই ভিডিওর সাউন্ড কোয়ালিটি ভালো করার চেষ্টা করতে হবে এবং ভিডিও যেন ক্লিন ও কোয়ালিটিফুল হয় সে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
অন্য চ্যানেলের ভিডিও আপলোড করলে সমস্যা হবে?
সবশেষে, ইউটিউবে কাজ করতে হলে অবশ্যই ধৈর্য্য থাকতে হবে। অনলাইনে কাজ করতে হলে অবশ্যই কাজের মন-মানসিকতা, পরিশ্রম ও ধৈর্য্যর প্রয়োজন আছে। তবে ইউটিউবে কাজ করে একটা পর্যায়ে পৌঁছে গেলে, পরে আর বেশি পরিশ্রম করা লাগবে না। একটি চ্যানেল দাড় করানোটাই কঠিন কাজ। যদি সেটি আপনি করে ফেলতে পারেন, তাহলে আপনাকে ছোঁয় কে?
1 মন্তব্যসমূহ
অনেক সুন্দর ভাবে বুঝানোর জন্য ধন্যবাদ।
উত্তরমুছুন