ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতির বদৌলতে আমরা অনলাইনভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পেয়েছি। অল্প সময়ের মধ্যে এই মাধ্যমটি আমাদের কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছে। বহুল পরিচিত সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক ছাড়া রয়েছে টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, গুগলপ্লাস, ভিকে প্রভৃতি। এগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে আমাদের জীবনমান সহজ হয়েছে অনেকাংশে। এর ভালো দিক হচ্ছে বিশ্বকে হাতের মুঠোয় পাওয়া। এগুলো সহজ করেছে যোগাযোগপদ্ধতি, মসৃণ করেছে তথ্যের আদান-প্রদান।
ভালোর বিপরীতে রয়েছে মন্দ। ব্যতিক্রম নয় সামাজিক মাধ্যমগুলোও। এরও রয়েছে খারাপ দিক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ওপর মানুষের মাত্রাতিরিক্ত আসক্তি জেগেছে। পরিণত হয়েছে নেশায়। সামাজিক কিংবা পারিবারিক কাজ ও পড়ালেখায় অমনোযোগী হয়ে অনেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নষ্ট করছেন ফেসবুক কিংবা অন্য মাধ্যমের পেছনে।
লাইক, কমেন্ট আর শেয়ারই শুধু নয়, উদ্ভট-আজগুবি অনেক বিষয় শেয়ার করে রাতারাতি স্টার কিংবা সেলিব্রিটিও হচ্ছেন অনেকে। যে কোনো উপায়ে সেলিব্রিটি হতে পারলেই কেল্লাফতে! অর্থাৎ শুরু হয়েছে প্রতিযোগিতা। জিতে গেলে মানসিক প্রশান্তি, হেরে গেলে যেন মাথার ওপর আকাশ ভেঙে পড়াÑএমনই পরিস্থিতি বিরাজ করছে সামাজিক মাধ্যমগুলোয়। এ থেকে মুক্তি না পেলে তীব্র মানসিক সমস্যা শুরু হতে পারে। তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সুখী হতে কিছু বিষয় মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ।
ভালো থাকবেন যেভাবে
আপনি যদি ফেসবুক ব্যবহারকারী হন তবে খেয়াল রাখতে হবে, কোনো পেজ কিংবা গ্রæপের ইনভাইটেশন বা আমন্ত্রণ পেলে জয়েন করার আগে অবশ্যই পেজ কিংবা গ্রæপটি ভালোভাবে দেখে নিতে হবে। মাথায় রাখতে হবে, সেখান থেকে আপনি কিছু শিখতে বা জানতে পারবেন কি না, আপনার মেধা-জ্ঞান বাড়াতে কোনো সাহায্য করবে কি না। যেমন একটি শিক্ষামূলক পেজে লাইক দিলে শিক্ষা বিষয়ে নানা পোস্ট আসবে। তা থেকে জ্ঞান আহরণ করা যাবে। বিনোদনমূলক কোনো পেজ বা গ্রæপে জয়েন করলে সারা দিনের বিনোদনের চাহিদা পূরণ হবে। ফলে শিক্ষার পাশাপাশি মনও ভালো থাকবে। ইতিবাচক পেজ অথবা গ্রæপে যোগ দিতে পারেন। এগুলো হতে পারে লাইফস্টাইল, খেলাধুলা কিংবা চিত্তবিনোদনবিষয়ক।
শুধু ফেসবুকে থাকলেই চলবে না, অনলাইনে রয়েছে অসংখ্য নিউজ সাইট, যেখান থেকে প্রতিনিয়ত ঘটে যাওয়া খবরগুলো পাওয়া যাবে। পাশাপাশি কিছু টিউটোরিয়াল সাইট রয়েছে। এসব সাইটের মাধ্যমে জেনে নিতে পারেন নানা বিষয়, শিখে নিতে পারেন ক্যারিয়ারের গঠনমূলক কাজ।
খারাপ সঙ্গ পরিহার করুন
এমন একজনকে বন্ধু বানালেন, যার আজেবাজে পোস্টের কারণে আপনার মনমানসিকতার পরিবর্তন হয়ে গেল! এমনটি কি ঘটেছে আপনার বেলায়? তাহলে এর ফলস্বরূপ নানা মানসিক সমস্যা ভর করবে আপনার মাথায়। জড়িয়ে পড়তে পারেন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে। এছাড়া কিছু অশালীন পেজ রয়েছে, যেখানে লাইক দেওয়ার ফলে সোসাইটি, পরিবার কিংবা অফিসে নষ্ট হতে পারে আপনার মানমর্যাদা। এ ধরনের পেজ বা গ্রæপ এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।
সবার প্রিয়পাত্র
ভালো কিছুর বিনিময়ে আপনিও সবার মন জয় করতে পারবেন। জয় করতে পারবেন নিজেকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিবাচক কিছু শেয়ার করার মাধ্যমেও এটা সম্ভব। সবসময় পজিটিভ স্ট্যাটাস দেওয়া উচিত। এতে আপনার গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে, ঋজু ব্যক্তিত্ববোধ ফুটে উঠবে। সবার কাছে ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে পারবেন। এর বিপরীতটা ঘটলে প্রশংসার পরিবর্তে ঘৃণা কুড়াতে হবে।
প্রয়োজনের চেয়ে বেশি কখনও ভালো নয়। তাই রুটিনমাফিক চলার চেষ্টা করুন। তাতেই নিশ্চিত হবে আপনার অনলাইনে ভালো থাকা। দৈনন্দিন জীবনের কাজগুলো ভালোমতো শেষ করে অবসর সময় কাটাতে পারেন অনলাইনে, অতিরিক্ত সময় নষ্ট না করাই উত্তম।

0 মন্তব্যসমূহ